সোয়েব সাঈদ, রামু ::
কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলার খুনিয়া পালং ইউনিয়নের ধোয়াপালং এলাকায় গত মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) ভোররাতে ধান ক্ষেতে চলে আসা একটি মা হাতিকে দূর্বৃত্তরা বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের ফাঁদে ফেলে হত্যা করে এবং তার মাথা ও শরীর খন্ডিত করে মাটিতে পুতে ফেলার চেষ্টা করে। এ ঘটনার প্রতিবাদে ২ সেপ্টেম্বর ২০২১ ইং বিকেল ৩ টায় রামু চৌমুহনী চত্বরে পরিবেশিবাদী সংগঠন ইডিসিআর, গ্রীন এনভায়রনমেন্ট মুভমেন্ট কক্সবাজার জেলা ও স্থানীয় জনসাধারণের সম্মিলিত আয়োজনে “বন্যপ্রাণীর আবাসস্থলে সকল ধরনের অবৈধ কর্মকান্ড বন্ধ ও অবৈধ দখলদার মুক্ত করার দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইডিসিআর সভাপতি চাইনিজ একাডেমি অফ সায়েন্স এর পরিবেশ ও বন্যপ্রাণী গবেষক ড. নাছির উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং গ্রীন এনভায়রনমেন্ট মুভমেন্ট কক্সবাজার জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক কায়সার মাহমুদের সঞ্চালনায় উক্ত মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য প্রদান করেন রামু উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক ছাত্রনেতা জনাব সালাউদ্দিন, রামু উপজেলা স্বেচ্ছাসেবলীগের সাধারণ সম্পাদক তপন মল্লিক, সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজন এর রামু উপজেলা সহ-সভাপতি কিশোর বড়ুয়া, গ্রীন এনভায়রনমেন্ট মুভমেন্ট এর সেলিম উল্লাহ সিরাজী, এডভোকেট তানভীর শাহ, আবদুর রহমান, মিনহাজুল মনোয়ার, ইমরান হোসাইন, নাহিদ আহমেদ অপু, সোহরাব কামাল জাবেদ সহ আরো অনেক।
উক্ত মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তারা ৩১ আগস্ট ভোররাতে খুনিয়া পালং ইউনিয়নের ধোয়াপালং এলাকায় হাতি হত্যার তীব্র নিন্দা জানান এবং হাতিসহ সকল বন্যপ্রাণী হত্যা বন্ধ এবং বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল অবৈধ দখলদার মুক্ত করার জোরালো দাবি জানান।
উক্ত মানববন্ধন কর্মসূচিতে মাবববন্ধন বক্তারা নির্মমভাবে হাতি হত্যার তীব্র নিন্দা করেন। বন্যপ্রাণীর নিরাপদ আবাসস্থল অবৈধ দখলদারদের দখলে যাওয়ার জন্য কারন হিসেবে বক্তারা বন বিভাগের কর্মকর্তাদের দায়িত্বে অবহেলাকে দায়ি করেন।
তাছাড়া উক্ত কর্মসূচিতে বক্তারা কয়েকযুগ যাবৎ পাহাড়ে বসবাস করা মানুষগুলোকে পূনর্বাসনের লক্ষ্যে আশ্রয়ন কেন্দ্র স্থাপনের জন্য সরকারের প্রতি জোড়ালো দাবি জানানো হয়।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপজেলার বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ কিশোর বড়–য়া বলেন- বন বনানী এবং বন্যপ্রাণী ধ্বংসের কারণে মানুষ নানা ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হচ্ছে মানুষের প্রয়োজনে মানুষের সঠিক বাসস্থান এবং জীবনযাপন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বন্যপ্রাণী এবং পরিবেশ সংরক্ষণ করতে হবে। তিনি আরো বলেন পরিবেশ সংরক্ষণ করতে না পারলে আমরা সবাই বিপর্যয়ের সম্মুখীন হব। কাজেই পরিবেশ সংরক্ষিত হলে আমরাই সংরক্ষিত থাকবো এবং সমগ্র মানব জাতিই নিরাপদ থাকবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে রামু উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন বলেন হাতি সবচেয়ে বৃহদাকার প্রাণী, কাজেই তার সংরক্ষণ মানে হচ্ছে অনেক বড় বনকে সংরক্ষণ করা। আর হাতি প্রকৃতির একটি অংশ। হাতি সংরক্ষণ প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার অন্যতম প্রধান একটি উপকরণ। কাজেই পরিবেশকে সংরক্ষণ করতে হলে হাতির মতো বড় প্রাণী সংরক্ষণ অবশ্যই অগ্রাধিকার দিতে হবে। তিনি সাম্প্রতিক সময়ে হাতি হত্যার জন্য তীব্র প্রতিবাদ জানান এবং তার বিচার নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি অনুরোধ করেন।
সভাপতির বক্তব্যে ডক্টর নাসির উদ্দিন বলেন ২০১৬ সালের জরিপ অনুযায়ি বাংলাদেশ ২৬৮ টি হাতি ছিল। তার মধ্যে কক্সসবাজার জেলাতেই ছিল ১১৭ টি হাতি। তবে ২০১৫ থেকে আজ পর্যন্ত শুধুমাত্র কক্সবাজারেই বিভিন্ন কারণে মারা গেছে ১৯ টি হাতি এবং সমগ্র দেশে মারা গেছে ৬৫ টি হাতি। তিনি বলেন হাতি হত্যার অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে হাতির আবাসস্থলে মানুষের বসবাস, চাষাবাদ এবং অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনা করা। কাজেই হাতি সংরক্ষণকে নিশ্চিত করতে হলে বনকে অবৈধ দখলদার মুক্ত করতে হবে এবং বন্যপ্রাণী আইনের সঠিক প্রয়োগ করতে হবে। একই সাথে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা এবং অধিদপ্তরকে একযোগে কাজ করতে হবে। বন বিভাগ একার পক্ষে বন এবং বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ করা সম্ভব নয়, তাই এই কাজ করার জন্য স্থানীয় জনগণ এবং রাজনীতিবিদদের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে জবরদখল বন্ধসহ বন্যপ্রাণী হত্যার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। তিনি আরো বলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা জলবায়ু উদ্বাস্তুদেরকে খুরুশকুলে যেইভাবে খুব অল্প জায়গার মধ্যে পুনর্বাসন করেছেন একইভাবে যে সকল মানুষ সংরক্ষিত বন দখল করে আছেন তাদের সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে নিয়ে এসে নির্দিষ্ট জায়গার মধ্যে বসবাসের ব্যবস্থা করা গেলে বন ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষন অনেকাংশে অগ্রগামী হবে।
প্রকাশ:
২০২১-০৯-০৩ ১২:২৩:২৯
আপডেট:২০২১-০৯-০৩ ১২:২৩:২৯
- চকরিয়ায় ৪৬টি পূজা মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপনের প্রস্তুতি
- চকরিয়ায় ইট বোঝাই ডাম্পার ট্রাকের চাপায় মোটরসাইকেল চালক নিহত
- চকরিয়ার ফাঁসিয়াখালীতে ভন্ড বৈদ্যের আবির্ভাব
- বৈষম্য মূলক নিয়োগে ফুঁসে উঠেছে চৌদ্দ হাজার সিএইচসিপি!
- কক্সবাজারে যোগ হচ্ছে রিজিওনাল ট্রেনিং সেন্টার :
- চকরিয়ায় যাত্রীবাহি বাস চাপায় মোটরসাইকেল চালক নিহত
- আগস্টে ৪৬৭ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪৭৬
- সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উপর হামলার প্রতিবাদে চকরিয়ায় মানববন্ধন
- চাঁদাদাবী, ভাঙচুর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে চেয়ারম্যান ইউনুছসহ ১২জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা
- কক্সবাজার আদালতে স্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বামীর যৌতুকের মামলা!
- তামাকের ব্যবহার কমাতে শক্তিশালী কর পদক্ষেপ ও আইনের বিকল্প নেই
- সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উপর হামলার প্রতিবাদে চকরিয়ায় মানববন্ধন
- চকরিয়ায় যাত্রীবাহি বাস চাপায় মোটরসাইকেল চালক নিহত
- কক্সবাজারে যোগ হচ্ছে রিজিওনাল ট্রেনিং সেন্টার :
- আগস্টে ৪৬৭ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪৭৬
- চকরিয়ায় পুকুরে গোসল করতে নেমে পানিতে ডুবে দুই বোনের মর্মান্তিক মৃত্যু
- তামাকের ব্যবহার কমাতে শক্তিশালী কর পদক্ষেপ ও আইনের বিকল্প নেই
- চাঁদাদাবী, ভাঙচুর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে চেয়ারম্যান ইউনুছসহ ১২জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা
- চকরিয়ার ফাঁসিয়াখালীতে ভন্ড বৈদ্যের আবির্ভাব
- চকরিয়ায় ইট বোঝাই ডাম্পার ট্রাকের চাপায় মোটরসাইকেল চালক নিহত
- বৈষম্য মূলক নিয়োগে ফুঁসে উঠেছে চৌদ্দ হাজার সিএইচসিপি!
- চকরিয়ায় ৪৬টি পূজা মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপনের প্রস্তুতি
পাঠকের মতামত: